কিডনি সমস্যার লক্ষণ, কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায়, কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয়, কিডনি পরিষ্কার করে এই ৯ খাবার | Kidney Samosar Lokhan, Kidney Bhalo Ache Kina Bojhar Upay, Kidney Samosha Hole Kothay Kothay Batha Hoy, Kidney Poriskar Kore Khabar

কিডনি সমস্যার লক্ষণ, কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায়, কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয়, কিডনি পরিষ্কার করে এই ৯ খাবার | Kidney Samosar Lokhan, Kidney Bhalo Ache Kina Bojhar Upay, Kidney Samosha Hole Kothay Kothay Batha Hoy, Kidney Poriskar Kore Khabar

Table of Contents

কিডনি সমস্যার লক্ষণ, কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ

কিডনি দেহের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। কিডনি রোগ খুব নীরবে শরীরের ক্ষতি করে। খুব জটিল অবস্থা না হওয়া পর্যন্ত সাধারণত লক্ষণগুলো ভালোভাবে প্রকাশও পায় না। তাই কিডনি রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো আগে থেকেই জেনে রাখা জরুরি।

প্রস্রাবে পরিবর্তন

কিডনি রোগের একটি বড় লক্ষণ হলো প্রস্রাবে পরিবর্তন হওয়া। কিডনির সমস্যা হলে প্রস্রাব বেশি হয় বা কম হয়। বিশেষত রাতে এই সমস্যা বাড়ে। প্রস্রাবের রং গাঢ় হয়। অনেক সময় প্রস্রাবের বেগ অনুভব হলেও প্রস্রাব হয় না।

প্রস্রাবের সময় ব্যথা

প্রস্রাবের সময় ব্যথা হওয়া কিডনির সমস্যার আরেকটি লক্ষণ। মূলত প্রস্রাবের সময় ব্যথা, জ্বালাপোড়া- এগুলো ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশনের লক্ষণ। যখন এটি কিডনিতে ছড়িয়ে পড়ে তখন জ্বর হয় এবং পিঠের পেছনে ব্যথা করে।

প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া

প্রস্রাবের সাথে রক্ত গেলে এটি খুবই ঝুঁকির বিষয়। এমন হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি লক্ষণ।

শরীরের চামড়া শুষ্ক  ফেটে যাওয়া

কিডনি সুস্থ অবস্থায় অনেক গুরুত্ব পূর্ণ কাজ করে যেমন শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ ও অতিরিক্ত তরল বাহির করা, লাল রক্ত কণিকা তৈরি করা, হাড়কে শক্তিশালী করা,দেহে খনিজ লবণের ভারসাম্য রক্ষা করা ইত্যাদি। কিডনি যখন রক্তের পুষ্টি উপাদান ও খনিজ লবণের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারেনা তখন শরীরের চামড়া শুষ্ক ও ফেটে যেতে পারে যা অ্যাডভান্স কিডনি রোগের সাথে সম্পর্কিত।

প্রস্রাবে বেশি ফেনা দেখা দেয়া

প্রস্রাবে অনেক বেশি ফেনা দেখা দিলে বুঝতে হবে যে, প্রস্রাবের সাথে প্রোটিন জাতীয় পদার্থ যাচ্ছে। ডিমের সাদা অংশ ফাটানো হলে যেমন ফেনা হয় প্রস্রাবের এই বুদবুদ ও ঠিক সেই রকম। প্রস্রাবে অ্যালবুমিন নামক প্রোটিনের উপস্থিতির জন্য এমনটি হয়। কিডনির ফিল্টার ড্যামেজ হয়ে গেলে প্রোটিন জাতীয় পদার্থ লিক হয়ে প্রস্রাবের সাথে বের হতে থাকে। এর ফলে প্রস্রাবে ফেনা দেখা দেয়।  

অনেক বেশি ক্লান্ত ও শক্তিহীন অনুভব করা

কিডনির কর্মক্ষমতা মারাত্মকভাবে কমে গেলে রক্তে অপদ্রব্য হিসেবে টক্সিন তৈরি হয়। এজন্য দুর্বল ও ক্লান্ত লাগার পাশাপাশি যে কোন বিষয়ে মনোযোগ দেয়াটা কঠিন হয়ে পড়ে। এর ফলে  শরীরে অন্য জটিলতা, যেমন রক্তশূন্যতা বা এনেমিয়াও দেখা দিতে পারে।  আর এই রক্তস্বল্পতার কারণেও দুর্বলতা বা অবসাদ গ্রস্থতার সৃষ্টি হতে পারে।

নিদ্রাহীনতা বা ঘুমের সমস্যা হওয়া

যদি কিডনি রক্ত পরিশোধন ঠিক মতো না করতে পারে তাহলে রক্তের টক্সিন প্রস্রাবের মাধ্যমে বের হতে পারেনা। এর ফলে বিষাক্ত টক্সিন রক্তেই থেকে যায়। এর ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। তাই অতিমাত্রায় নিদ্রাহীনতা ক্রনিক কিডনি ডিজিজের উপসর্গ হতে পারে। এছাড়া অবেসিটি বা স্থূলতারসাথেও ক্রনিক কিডনি রোগের একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে।

অতিমাত্রায় ক্ষুধা কমে যাওয়া

শরীরে টক্সিনের উৎপাদন বেড়ে গেলে কিডনির কার্যকারিতা কমে যায়। এর ফলে রোগীর ক্ষুধার পরিমাণ মারাত্মকভাবে কমে যেতে পারে।

মনোযোগ দিতে অসুবিধা হওয়া

লোহিত রক্তকণিকা কমে যাওয়ার কারণে মস্তিস্কে অক্সিজেন পরিবহন কমে যায়। এতে কাজে মনোযোগ দিতে অসুবিধা হয়।

সবসময় শীত বোধ হওয়া

কিডনি রোগ হলে গরম আবহাওয়ার মধ্যেও শীত শীত অনুভব হয়। আর কিডনিতে সংক্রমণ হলে জ্বরও আসতে পারে।

ত্বকে র‍্যাশ হওয়া

কিডনি অকার্যকর হয়ে পড়লে রক্তে বর্জ্য পদার্থ বাড়তে থাকে। এটি ত্বকে চুলকানি এবং র‍্যাশ তৈরি করতে পারে।

বমি বা বমি বমি ভাব

রক্তে বর্জ্যনীয় পদার্থ বেড়ে যাওয়ায় কিডনির রোগে বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়ার সমস্যা হতে পারে।

ছোটো ছোটো শ্বাস

কিডনি রোগে ফুসফুসে তরল পদার্থ জমা হয়। এ ছাড়া কিডনি রোগে শরীরে রক্তশূন্যতাও দেখা দেয়। এসব কারণে শ্বাসের সমস্যা হয়, তাই অনেকে ছোট ছোট করে শ্বাস নেন।

জ্বর

ঠান্ডা লাগেনি, অথচ কোনও কারণ ছাড়াই জ্বর আসছে বার বার। সাবধান, কিডনির সমস্যার কারণেও কিন্তু হতে পারে এমন। ঘন ঘন শরীরের তাপমাত্রা বাড়লে বিষয়টি নজরে রাখুন। চিকিৎসকের সঙ্গেও পরামর্শ করুন বিষয়টি নিয়ে।

কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয়

কিডনির সমস্যা হলে মূলত পিঠে বা মেরুদণ্ডের ডানে ও বামে কিডনির ব্যথা অনুভূত হয়ে থাকে। এটি পেটের সামনে, পাঁজরের ঠিক নীচেও অনুভূত হতে পারে। ব্যথা তীক্ষ্ণ, নিস্তেজ বা জ্বলন্ত হতে পারে।

কিডনির ব্যথা প্রায়শই একটি নিস্তেজ ব্যথা যেটি স্পর্শ করলে তীক্ষ্ণ হয়ে উঠতে পারে। কখনও কখনও কিডনির ব্যথার সাথে অন্যান্য উপসর্গ দেখা যায়, যেমন বমি বমি ভাব, বমি, জ্বর বা মূত্রনালীর সংক্রমণ।

চোখের চারপাশে ফুলে যাওয়া

কারও কিডনি যদি অনেক বেশি পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাহলে প্রস্রাবের সাথে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন বের হতে পারে। এর ফলে তাঁর চোখের চারপাশে ফুলে যেতে পারে।

পায়ের পাতা  গোড়ালি ফুলে যাওয়া  

কিডনির কার্যকারিতা কমে গেলে শরীরে সোডিয়ামের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। ফলস্বরূপ রোগীর পায়ের পাতা এবং গোড়ালি ফুলে যায়। এই পায়ের নীচের অংশ ফুলে যাওয়া হৃদরোগ ও লিভারের জটিলতা নানাবিধ দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা তৈরি করতে পারে।  

পেছনে ব্যথা

কিছু কিছু কিডনি রোগে শরীরে ব্যথা হয়। পিঠের পাশে নিচের দিকে ব্যথা হয়। এটিও কিডনি রোগের একটি অন্যতম লক্ষণ।

মাংসপেশীতে খিঁচুনি হওয়া

কিডনির কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়ে গেলে শরীরের ইলেক্ট্রোলাইটের যেমন- ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের মাত্রা কমে গেলে দেহে এসব উপাদানের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। এই ভারসাম্যহীনতার জন্য মাংসপেশিতে খিল লাগা বা খিঁচুনি জাতীয় সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও বমি বমি ভাব, নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ হওয়া, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, সব সময় ঠান্ডা অনুভব করা, মাথা ঘোরা, কোমর ও পায়ে ব্যাথা হওয়া ইত্যাদি উপসর্গ গুলোও দেখা দিতে পারে।

দেহে ফোলা ভাব

কিডনি শরীর থেকে বর্জ্য এবং বাড়তি পানি বের করে দেয়। কিডনিতে রোগ হলে এই বাড়তি পানি বের হতে সমস্যা হয়। বাড়তি পানি শরীরে ফোলাভাব তৈরি করে।

সুস্থ কিডনির লক্ষণ, কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায়

যাদের কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কোনওরকম আশঙ্কা রয়েছে, মানে, কেউ যদি ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের রোগী হয়ে থাকেন বা কারও পরিবারে কিডনির অসুখ থেকে থাকে বা যাঁদের বয়স ৬০ পেরিয়েছে, তাঁদের উচিত বছরে অন্তত দু-বার দুটো পরীক্ষা করানো। ভারতের ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশনের তথ্য থেকে জানা যায়, এসিআর ও জিএফআর -এর মতো দুটো সিম্পল টেস্ট করালেই ধরা পড়বে আপনার কিডনি ঠিকঠাক কাজ করছে কি না।

১. মূত্র পরীক্ষা বা ACR

ACR হল অ্যালবুমিন ও ক্রিয়েটিনিনের অনুপাত। অ্যালবুমিন হল বিশেষ ধরনের প্রোটিন। মূত্রে অ্যালবুমিন আছে কি না, পরীক্ষা করে সেটাই দেখা হয়। আমাদের শরীরের জন্য প্রোটিন অত্যন্ত জরুরি। যে কারণে রক্তে প্রোটিন থাকা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু, এই প্রোটিন কখনোই মূত্রে থাকার কথা নয়। যদি মূত্র পরীক্ষায় প্রোটিন পাওয়া যায়, তার মানে হল, কিডনি ঠিকঠাক ভাবে রক্তকে ছাঁকতে পারছে না। তাই ইউরিন টেস্টে প্রোটিন পজিটিভ হলে, নিশ্চিত হতে তাঁর NFR করাতে হবে। যদি, তিন মাস বা তার বেশি সময় ধরে রেজাল্ট পজিটিভ হয়, তা কিডনি অসুখের লক্ষণ।

২. GFR কাউন্ট করতে রক্ত পরীক্ষা

কিডনি খারাপ হলে, তা রক্ত থেকে ক্রিয়েটিনিন অর্থাত্‍‌ বর্জ্য পদার্থ ঠিকমতো বের করে দিতে পারে না। তবে, এই ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা হল প্রথম ধাপ। এর পর গ্লোমেরুলার ফিলট্রেশন রেট বা GFR দেখতে হবে। সেই রেজাল্ট দেখেই ডাক্তার বুঝতে পারবেন আপনির কিডনি কেমন কাজ করছে।

কোলেস্টেরল লক্ষণ, কোলেস্টেরল কমানোর ঘরোয়া উপায়, কোলেস্টেরল কমানোর খাদ্য তালিকা, সম্বন্ধে পড়ার জন্য, ক্লিক করুন

কিডনি পরিষ্কার করে এই ৯ খাবার

স্বাস্থ্যবান হৃদপিণ্ডের মতোই একটি স্বাস্থ্যবান কিডনি থাকাটাও জরুরি। কিডনিদের প্রধান কাজ হলো দেহ থেকে বর্জ্য বের করে দেওয়া। এবং ক্ষতিকর টক্সিন বা বিষ অপসারণের মাধ্যমে দেহ থেকে অতিরিক্ত জল বের করে দেওয়া। এছাড়াও কিডনি ইলেকট্রোলাইটস এবং অন্যান্য তরলের ভারসাম্য রক্ষা করে। এমনই গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গকে সুস্থ রাখার জন্য সঠিক কিডনির জন্য উপকারী খাদ্যাভ্যাসও জরুরি। এখানে রইল এমন নয় খাদ্যের তালিকা যেগুলো কিডনির সুরক্ষায় নিয়মিত খেতে হবে।

সবুজ শাকসবজি

নিয়মিত সবুজ শাকসবজি খেতে হবে। বেশিরভাগ শাকসবজিতে ভিটামিন সি, কে, ফাইবার ও ফলিক এসিড থাকে। এগুলো রক্তচাপ কমায়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এবং কিডনি জটিলতা কমায়।

ফুলকপি

ফুলকপি ভিটামিন কে, ফোলেট এবং ফাইবারসহ অনেক পুষ্টি সরবরাহ করে। এটিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি যৌগ রয়েছে, যা আপনার কিডনি পরিষ্কার রাখতে সহয়তা করে। এ ছাড়া আপনি চাইলে কম পটাসিয়াম যুক্ত সাইড খাবার হিসেবে আলুর জায়গায় ম্যাশ করা ফুলকপি ব্যবহার করতে পারেন।

ক্যানবেরি জুস

চেরির মতো ক্যানবেরিতেও রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি ও ম্যাগনেসিয়াম। এই দুটি উপাদান কিডনির ক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। নিয়মিত ক্যানবেরি জুস খেলে মূত্রথলির সংক্রমণ কমে যায়। সেই সঙ্গে এটি কিডনিও পরিষ্কার করে। এছাড়া কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকিও কমে যায়।

ক্র্যানবেরিতে রয়েছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস নামক এ- টাইপ প্রোঅ্যান্থোসায়ানিডিনস, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা প্রস্রাবে ব্যাকটেরিয়ার মাত্রা কমিয়ে মূত্রনালীর এবং কিডনি সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে। এছাড়া এটিতে পটাসিয়াম, ফসফরাস এবং সোডিয়ামের পরিমাণও কম।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্র্যানবেরি এবং ক্র্যানবেরি জুস খেলে তা মূত্রনালীর সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে, এ ধরনের সংক্রমণ মূত্রাশয় এবং কিডনিতে চাপ সৃষ্টি করে। ফলে কিডনির ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ক্র্যানবেরির জুস খেলে তা কিডনি পরিষ্কার রাখতে কাজ করে।

সাইট্রাস জাতীয় ফল

লেবু বা কমলা আমাদের শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে এবং কিডনি থেকে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। এই ফলগুলোতে উচ্চ মাত্রার সাইট্রেটের উপস্থিতির থাকে, যা কিডনিতে পাথর গঠন প্রতিরোধে সহায়তা করে।  এসব ফল আপনার কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

মাশরুম

মাশরুম একটি সুস্বাদু উপাদান যা আপনি একটি উদ্ভিদ-ভিত্তিক মাংস বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এগুলি কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য উপযুক্ত যারা উদ্ভিদ-ভিত্তিক ডায়েট অনুসরণ করেন এবং যারা রেনাল ডায়েটে তাদের প্রোটিন গ্রহণ সীমিত করতে হবে। মাশরুমে বি ভিটামিন, তামা, ম্যাঙ্গানিজ এবং সেলেনিয়ামের একটি দুর্দান্ত উৎস। এ ছাড়া এটি উদ্ভিদভিত্তিক প্রোটিন এবং ফাইবার সরবরাহ করে।

হলুদ

এলার্জি থেকে ত্বককে রক্ষা করা ত্বককে পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি কিডনির রক্ষাও করে হলুদ। নিয়মিত হলুদ খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। সেই সঙ্গে কিডনিও পরিষ্কার হয়। এতে থাকা কারকুমিনে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান কিডনি রোগ ও পাথর জমা হওয়া রোধ করে।

আপেল

প্রচলিত আছে ‘প্রতিদিন একটা আপেল খান আর ডাক্তারকে দূরে রাখুন’। কথাটা কিডনির ক্ষেত্রেও সত্য। আপেল উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার, এতে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটোরি আছে যা বাজে কোলেস্টেরল দূর করে হৃদ রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। এছাড়া এটি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। আপেল কাঁচা বা রান্না করে অথবা প্রতিদিন এক গ্লাস আপেলের জুস খাওয়ার চেষ্টা করুন।

লাল আঙ্গুর

লাল আঙুরের বাইরের আবরণ ও বীজে রিসভারিট্রল নামের এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মেলে। এটি আমাদের ত্বক ও শরীরে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে লাল আঙুরে থাকা রিসভারিট্রল, পলিফেনল ও ফ্ল্যাভোনয়েড নামক তিন ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। লাল আঙুরে রয়েছে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি। এই দুই ভিটামিন দূষণ থেকে রক্ষা করে ত্বককে। এছাড়া ত্বকের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ধরে রাখতেও আঙুরের জুড়ি নেই।

সামুদ্রিক মাছ

স্যামন, টুনা জাতীয় চর্বিযুক্ত মাছ কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশনের একটি গবেষণা অনুসারে, ওমেগা -৩ চর্বি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া রক্তে চর্বির মাত্রা কমাতে এবং রক্তচাপকে কিছুটা কমাতে সাহায্য করতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ কিডনি রোগের ঝুঁকির কারণ, এটি কমানোর প্রাকৃতিক উপায় মেনে চলুন। এতে কিডনি ভালো রাখা সহজ হবে। সামুদ্রিক মাছ উচ্চ মানের প্রোটিন সরবরাহ করে। এতে ওমেগা-৩ নামক স্বাস্থ্যকর চর্বিও রয়েছে।

রসুন

রসুন ইনফ্লেমেটোরি এবং কোলেস্টেরল কমাতে অনেক বেশি কার্যকরী। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আছে যা দেহের প্রদাহ দূর করে থাকে। তবে রান্না করে খেলে এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় না। ভাল হয় সকালে খালি পেটে কাঁচা রসুন খাওয়া, এটি হার্ট ভাল রাখার পাশাপাশি কিডনিকেও ভাল রাখে।

ড্যান্ডেলিয়ন

এটি হলো একধরনের বন্য হলুদ ফুলের গাছ। এর মূল এবং পাতা শুকিয়ে চা বানিয়ে খেতে হয়। প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়ায় এবং দেহ থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দেয়। এ ছাড়া পেটে স্ফীতি কমায়। এটি প্রাকৃতিকভাবে কিডনিকে পরিষ্কার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

অলিভ অয়েল

একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রতিদিনের রান্নায় অন্যান্য তেলের চেয়ে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা বেশি স্বাস্থ্যকর। এতে অলিক এসিড, অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি ফ্যাটি এসিড আছে যা কিডনি সুস্থ রাখার পাশাপাশি ক্যান্সার প্রতিরোধ করে থাকে।

লেবুর শরবত

প্রতিদিন লেবু মেশানো জল খেলেও কিডনি পরিষ্কার হয়। লেবুতে যে এসিড উপাদান আছে তা কিডনিতে জমা হওয়া পাথর ভাঙ্গতে বেশ কার্যকর। লেবুতে যে সাইট্রাস উপাদান আছে তা কিডনিতে থাকা ক্রিস্টালদের পরস্পরের জোড়া লাগতে বাধা দেয়।

আদা

কিডনিকে আরও কার্যকরী করতে আদা খাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ কিডনিকে ভাল রাখতে আদা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আদা কিডনিতে রক্তের চলাচল বাড়িয়ে কিডনিকে সচল ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এর ফলে কিডনির কর্মক্ষমতা আরও বেড়ে যায়। যদি নিয়মিত কাঁচা আদা, আদার গুড়া কিংবা জুস করে খাওয়া যায় তাহলে তা কিডনি পরিষ্কারে ভূমিকা রাখে।

কিডনি পাথর গলায় কোন খাবার

শরীরে জলের ঘাটতি যেন না হয় তা দেখা, মল-মূত্রজনিত কোনও সমস্যার প্রতি নজর রাখা এবং তলপেটে-কোমরে একটানা ব্যথা থাকলে তা নিয়ে সতর্ক থাকা— রোজকার জীবনে কিডনির খেয়াল রাখা বলতে এইটুকুই। 

পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেতে হবে

জল যত বেশি খাবেন, আকারে ছোট হলে পাথর তত তাড়াতাড়ি মূত্রের সঙ্গে বেরিয়ে যাবে। যিনি দিনে ১ গ্লাস জল খান আর যিনি ২৫ গ্লাস জল খান দু’জনের মধ্যে দ্বিতীয় জনের ‘কোয়ান্টাম অফ ইউরিন প্রোডাকশন’ বেশি। ফলে মূত্রের বেগও বেশি। তাতেই ছোট স্টোন (১-২ মিলিমিটার) শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে পারে।

পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন খেতে হবে

প্রোটিন বলতে প্রথমেই মাথায় আসে মাছ, মাংস, ডিমের কথা। তবে চিকিৎসকদের মতে, এ ক্ষেত্রে উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের উপর ভরসা রাখাই ভাল।

নুন খাওয়া কমাতে হবে

এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে গেলে নুন খাওয়া কমাতে হবে। অর্থাৎ কমাতে হবে সোডিয়াম গ্রহণের পরিমাণ। এ ক্ষেত্রে বাইরের খাবার, প্যাকেটজাত খাবারে লাগাম টানা অত্যন্ত জরুরি।

ক্যালশিয়াম জরুরি

শুধু হাড়ের জন্য নয়, কিডনির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হল ক্যালশিয়াম। শরীরে যদি পর্যাপ্ত ক্যালশিয়াম থাকে, তা হলে কিডনিতে পাথর হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে বাইরে থেকে ক্যালশিয়াম ওষুধ না খেয়ে ভরসা রাখতে পারেন দুধ, পনিরের উপর।

অক্সালেটযুক্ত খাবার খেতে হবে

পালং, বিট, বাদামের মতো খাবারে অক্সালেটের পরিমাণ বেশি। তাই এই খাবারগুলি বেশি করে খেতে বলেন চিকিৎসকেরা। পাশাপাশি লেবু, কমলালেবু, আঙুর, ব্লু-বেরি বা এই জাতীয় সাইট্রিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ ফল খাওয়া যেতে পারে।

সাইট্রাস জাতীয় খাবার খান

সাইট্রাস খাবার আপনি নিয়মিত খান। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের লেবুতে রয়েছে অনেকটা পরিমাণে সাইট্রাস। এই ফল শরীরের জন্য ভালো। এতে থাকে ভিটামিন সি। মাথায় রাখতে হবে যে সাইট্রাস ফ্রুট কিন্তু কিডনি স্টোন ছোট করতে বা প্রতিরোধ করতে পারে। তাই আপনাকে অবশ্যই এই খাবার খেতে হবে। আপনি এই ফল শুধু শুধু খেতে পারেন। আবার জুস করেও খেতে পারেন। যেভাবেই খান ফল পাবেন। 

ক্যালশিয়াম ও ভিটামিন ডি প্রয়োজন

শরীরে ক্যালশিয়াম কম গেলে অক্সালেট বাড়তে পারে। আর এই অক্সালেট কিন্তু কিডনি স্টোন তৈরির অন্যতম কারণ।তবে সাপ্লিমেন্ট নয়, বরং খাবারের মাধ্যমেই ক্যালশিয়াম গ্রহণ করুন। সাপ্লিমেন্ট খেলে উলটে সমস্যা তৈরি হয়ে যেতে পারে। তাই চেষ্টা করুন দুধ, দই, চিজ খেতে। এছাড়া সবুজ রঙের শাক, টোফু, ডালেও থাকে ক্যালশিয়াম। এছাড়া এমন খাবার খান যেখানে থাকে ভিটমিন ডি। এই তালিকায় মাশরুম, স্যালমন, চিজ ইত্যাদি রয়েছে।

সবচেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে Naturicare আয়ুর্বেদিক পণ্য কিনতে, এখানে ক্লিক করুন, click here

Naturicare.in

FAQ | কিডনি

Q1. একজন ডায়ালাইসিস রোগী সকালের নাস্তায় কী খাবার খান?

Ans – ডায়ালাইসিস করা ব্যক্তির জন্য প্রাতঃরাশের কিছু ধারণার মধ্যে নিম্নলিখিতগুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:
– ভুনা ডিম 
– ওটমিল
– চালের ক্রিম
– গমের ক্রিম
– সবজির সাথে ডালিয়া
– কর্নমিল

Q2. ডায়ালাইসিস রোগীর কোন খাবারগুলি এড়ানো উচিত?

Ans – ডায়ালাইসিস রোগীরা যেসব খাবার এড়িয়ে যান সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:
– গাঢ় রঙের সোডা
– গমের পাউরুটি
– প্রক্রিয়াজাত খাদ্য
– কলা
– দুগ্ধজাত পণ্য
– আচার
– টমেটো
– রেডি-টু-ইট খাবার
– ব্রাউন রাইস 
– অ্যাভোকাডো

Q3. কেন কিডনি রোগীদের সোডিয়াম গ্রহণ নিরীক্ষণ করা প্রয়োজন

Ans – যখন আপনার শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে সোডিয়াম থাকে, তখন আপনার কিডনি তাদের নির্মূল করা কঠিন মনে করে। সুতরাং, এটি রক্ত ​​প্রবাহে জমা হয় যা অবশেষে উচ্চ রক্তচাপ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার দিকে পরিচালিত করে।

Leave a Reply

Shopping cart

0
image/svg+xml

No products in the cart.

Continue Shopping