কোলেস্টেরল লক্ষণ, কোলেস্টেরল কমানোর ঘরোয়া উপায়, কোলেস্টেরল কমানোর খাদ্য তালিকা

কোলেস্টেরল লক্ষণ, কোলেস্টেরল কমানোর ঘরোয়া উপায়, কোলেস্টেরল কমানোর খাদ্য তালিকা | Cholesterol Lakhsan, Cholesterol Komanor Gharoa Upay, Cholesterol Komanor Kadho Talika

Table of Contents

কোলেস্টেরল কি

আধুনিক জীবনযাপন, অনিয়মিত খাবারদাবার ধরণের জন্য উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা দিনদিন বেড়েই চলেছে। প্রতি বছর, ১ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ কোলেস্টেরলের কারণে অসুস্থ হয়। অসুস্থ প্রতি ১00 জনের মধ্যে ৪0 জনের উচ্চ কোলেস্টেরল রয়েছে। আমরা যা খাই তা শরীরে প্রভাব ফেলে এবং উচ্চ কোলেস্টেরলের ঝুঁকি বাড়ায়। শরীরকে সুস্থ রাখতে সুষম খাদ্য গ্রহণ করা প্রয়োজন। পুষ্টিকর উপাদান সমৃদ্ধ খাদ্য কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে এবং অন্যান্য রোগের ঝুঁকিও কমায়।

কলেস্টেরল এক ধরনের চর্বিজাতীয়, তৈলাক্ত স্টেরয়েড যা কোষের ঝিল্লি বা (সেল মেমব্রেনে)-এ পাওয়া যায় এবং যা সব প্রাণীর রক্তে পরিবাহিত হয়। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের সেল মেমব্রেনের এটি একটি অত্যাবশ্যক উপাদান. এই উপাদান মেমেব্রেনের মধ্য দিয়ে তরল পদার্থের ভেদ্যতা সচল রাখে এবং তার তারল্য বজায় রাখে.এছাড়াও কলেস্টেরল একটি জরুরি প্রিকার্সার মলিকিউল যা বাইল আসিড, স্টেরয়েড হরমোন এবং স্নেহজাতীয় পদার্থে দ্রাব্য ভিটামিনের জৈব সংশ্লেষ ঘটায়.কলেস্টেরল সবচেয়ে জরুরি স্টেরল যা প্রাণীদেহে সংশ্লেষিত হয়।

কোলেস্টেরল আমাদের শরীরে এক ধরনের চর্বির মতো। বিভিন্ন ধরণের কোলেস্টেরল রয়েছে ট্রাইগ্লিসারাইড, এলডিএল, এইচডিএল এবং তাদের মধ্যে একটি আমাদের জন্য ভাল। কিন্তু অন্য তিন প্রকার ভালো নয় এবং সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এই খারাপ ধরনের কোলেস্টেরল আমাদের রক্তনালীতে জমা হতে পারে এবং রক্তের প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। যখন এটি ঘটে, এটি আমাদের হৃদয় কে অসুস্থ করে তুলতে পারে এবং হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে।

কোলেস্টেরল লক্ষণ

অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস রক্তে ‘খারাপ’ কোলেস্টেরলের মাত্রা ক্রমাগত বাড়িয়ে দেয়। কোলেস্টেরল বাড়লে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

১. চোখের নিচে বা চোখের পাতায় সাদাটে বা হলদেটে ব্যথাহীন ফোলা অংশ দেখা দেয়াটা রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ। এরকম লক্ষণ দেখলে দ্রুত রক্ত পরীক্ষা করান।

২. মাঝে মাঝে বুকে ব্যথা হচ্ছে, অথচ ইসিজি রিপোর্টে তেমন কিছু সমস্যা খুঁজে পাননি? এমন হলে এক বার রক্ত পরীক্ষা করিয়ে দেখে নিন, রক্তে কোলেস্টেরল বেড়েছে কিনা।

৩. কোনও কারণ ছাড়া মাঝে মাঝেই হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাচ্ছে। এমনটা হলে আর সময় নষ্ট না করে রক্ত পরীক্ষা করান। কোলেস্টেরল হৃদগতিকে বাড়িয়ে দেয়।

৪. রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে অনেক সময় রক্তনালি আটকে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে বাধা পড়ে। এতে ঘাড় ও মাথার পেছনে ভীষণ ব্যথা হয়। শুধু মাথাতেই নয়, ঘাড়েও অস্বস্তিকর ব্যথা হয়।

৫. কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে অনেক সময়ে কমলা চাকা চাকা দেখা দেয় ত্বকে। অনেক সময়ে আবার মোমের মতো ফোলা ভাব দেখা দেয় শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে।

৬. কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে রক্তনালী বন্ধ হয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা অনুভূত হয়। পেশীতে ব্যথা এবং চাপ বিশেষত পায়ে ব্যথা অনুভূত হয়।

৭. শরীরে কোলেস্টেরল বৃদ্ধির কারণে নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন- ঘাম, ক্লান্তি, দুর্বলতা, ক্ষুধা হ্রাস ইত্যাদি।

৮. হাতে-পায়ে রক্ত চলাচল ব্যাহত হলে অনেক সময় অসাড় বা ঝিঁঝি ধরার মতো লক্ষণ দেখা যায়। অনেকের আবার হাত-পায়ের ত্বকের রংও ফ্যাকাশে হয়ে যায়। আবার অনেক ক্ষণ হাঁটলে বা দাঁড়িয়ে থাকলে পায়ে রক্ত জমার মতো কালশিটেও পড়তে দেখা যায়।

৯. কোলেস্টেরল খুব বেড়ে গেলে পায়ের টেন্ডন লিগামেন্টগুলোতে প্রভাব পড়ে। এক্ষেত্রে পায়ের ধমনিগুলো সরু হয়ে গেলে পায়ের নিচের অংশ অনেকটা অক্সিজেনসহ রক্ত পৌঁছাতে পারে না। তাতে পা ভারী হয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ে সহজেই। পায়ের যন্ত্রণা শুরু হয়। উরু বা হাঁটুর নিচে পেছনের দিকে ব্যথা হ’তে পারে। হাঁটার সময়েই এই ধরনের ব্যথা বাড়ে।

কোলেস্টেরল কমানোর ঘরোয়া উপায়

শরীরে উচ্চমাত্রায় ক্ষতিকর কোলেস্টেরল থাকলে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বাড়ে। তবে নিয়মিত ব্যায়ামের পাশাপাশি রসুন, আমলকী ও মেথির মতো খাবার কাজে লাগতে পারে।

রসুন

রান্নাঘরেই পাবেন রসুন। স্বাস্থ্যকর রসুনের গুণাগুণ অনেকের জানা। রসুনে আছে অ্যামাইনো অ্যাসিড, ভিটামিন, খনিজ ও অর্গানোসালফার যৌগ। এই যৌগ ঔষধি গুণ হিসেবে কাজ করে। বেশ কয়েকটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরে বাজে কোলেস্টেরল কমাতে কার্যকর রসুন। এটি রক্তচাপ কমানোর ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর রসুন দৈনিক অর্ধেক বা এক কোয়া করে খেলে কোলস্টেরলের মাত্রা ৯ শতাংশ কমতে দেখা যায়।

গ্রিন টি

গ্রিন টি বা সবুজ চায়ে আছে পলিফেনল। এটি মানুষের শরীরে দারুণ উপকার দেয়। এটি শরীরের বাজে কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। গ্রিন টি আমাদের শরীরকে সতেজ ও উৎফুল্ল রাখতে সাহায্য করে। এটি হৃদ্‌রোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকিও কমায়। নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে শরীরের মেদ কোষে বেশি শর্করা ঢুকতে পারে না। ফলে এই চা আমাদের শরীরের ওজন ও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

ধনে

আমাদের দেহে এলডিএল নামক একধরনের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল থাকে, যা দেহের শিরা-উপশিরার দেয়ালে জমে হৃৎপিণ্ডে রক্ত চলাচলে সমস্যা বাড়ায়। এর কারণে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ধনে এই ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয়। আবার দেহের জন্য ভালো বা উপকারী একধরনের কোলেস্টেরল, এইচডিএলর মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে শরীর সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে এই ধনে।

মেথি

মেথিকে মসলা, খাবার, পথ্য—তিনটিই বলা চলে। স্বাদ তিতা ধরনের। এতে রয়েছে রক্তের চিনির মাত্রা কমানোর বিস্ময়কর শক্তি ও তারুণ্য ধরে রাখার বিস্ময়কর এক ক্ষমতা। যাঁরা নিয়মিত মেথি খান, তাঁদের বুড়িয়ে যাওয়ার গতিটা অত্যন্ত ধীর হয়। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মেথি চিবিয়ে খেলে বা এক গ্লাস পানিতে মেথি ভিজিয়ে রেখে সেই পানি পান করলে শরীরের রোগ-জীবাণু মরে। বিশেষত কৃমি মরে। রক্তের চিনির মাত্রা কমে। রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা চর্বির মাত্রা কমে যায়। ডায়াবেটিসের রোগী থেকে শুরু করে হৃদ্‌রোগের রোগী পর্যন্ত সবাইকে তাঁদের খাবারে মেথি রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।

আমলকী

টক আর তেতো স্বাদে ভরা আমলকী গুণে-মানে অতুলনীয়। ফলটি শুধু ভিটামিন আর খনিজ উপাদানেই ভরপুর নয়, বিভিন্ন রোগব্যাধি দূর করায়ও রয়েছে অসাধারণ গুণ। আমলকীতে থাকা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, সর্দি-কাশি ঠেকাতে পারে। আয়ুর্বেদশাস্ত্রেও আমলকীর জুসের গুণ বর্ণনা করে বলা হয়েছে, শরীরের সব ধরনের ক্রিয়ার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে তা। নিয়মিত আমলকীর জুস খেলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। অ্যামিনো অ্যাসিড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় হৃদ্‌যন্ত্র ভালো থাকে।

হলুদ

হলুদ এমন একটি মশলা যা ধমনীর দেয়ালে জমে থাকা চর্বি গলিয়ে ফেলতে সাহায্য করে ও শিরায় জমা কোলেস্টেরল ভেঙে দেয়। এর জন্য হালকা গরম জলের মধ্যে হলুদ মিশিয়ে পান করতে পারেন।

মধু

মধু রক্তনালীর আস্তরণে খারাপ কোলেস্টেরল প্রবেশ করতে বাধা দেয়। এর জন্য ১ কাপ গরম জলের মধ্যে ১ চা চামচ মধু ও লেবুর রস ও কয়েক ফোঁটা আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে নিন।

আপেল

আপেল হল পেকটিন সমৃদ্ধ ও এতে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড নামক প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় ও এমনকি ফুসফুস ও হৃদয়কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এ জন্য প্রতিদিন একটি করে আপেল খেলে উপকার পাবেন সব দিক থেকে।

বিটরুট

বিটরুটে রয়েছে ক্যারোটিনয়েড এবং ফ্ল্যাভোনয়েড যা এলডিএল অর্থাৎ নোংরা কোলেস্টেরল কমাতে সহায়ককারী উপাদান। বিটের গুণে রক্তে শর্করা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ থাকে। এই জন্য, আপনি এটি সালাদে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন বা এর রস পান করতে পারেন।

হার্ট ভালো আছে বুঝার উপায়, হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার, হার্টের জন্য উপকারী খাবার: সম্বন্ধে পড়ার জন্য, ক্লিক করুন

কোলেস্টেরল কমানোর খাদ্য তালিকা

রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে যে ধরনের খাবার খেতে হবে

১. জলপাইয়ের তেল এবং জলপাইয়ের তৈরি খাদ্য

অলিভ অয়েল বা জলপাইয়ের তেলে রয়েছে মনো-আনসেচুরেটেড ফ্যাটি এসিড ও ভিটামিন ই। গবেষণায় দেখা গেছে, মনো-আনসেচুরেটেড ফ্যাটি এসিড দেহের খারাপ কলেস্টেরল এলডিএলকে কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএলকে বাড়াতে সাহায্য করে। তাই যদি কেউ দেহের ভালো কোলেস্টেরলকে বাড়িয়ে খারাপ কোলেস্টেরলকে কমাতে চায়, তার জলপাইয়ের তেল বা জলপাইয়ের তৈরি খাবার অবশ্যই খেতে হবে। প্রতিদিন খাবারে এক অথবা দুই চামচ জলপাইয়ের তেল সালাদ বা রান্নায় ব্যবহার করলে শরীরে মনো-আনসেচুরেটেড ফ্যাটি এসিডের চাহিদা পূরণ হবে।

২. সবজি  

সবজি দেহের কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায় এবং শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। এ জাতীয় খাবার যেমন: শুষ্ক সোয়া প্রোডাক্ট, মটরশুটি, টফু ইত্যাদি। 

৩. ননি ছাড়া দই এবং দুগ্ধজাত খাদ্য

যদি আপনি রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণকে কমাতে চান, তাহলে ননিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার বাদ দিতে হবে। এর মানে এই নয় যে আপনি দুধের তৈরি খাবার খাবেন না। যদি দুগ্ধজাত খাবার না খাওয়া হয় তবে ক্যালসিয়াম, মিনারেল এ ধরনের প্রয়োজনীয় উপাদান থেকে শরীর বঞ্চিত হবে। এগুলো মানব শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কার্যক্ষমতাকে সক্রিয় রাখে।  দুধের তৈরি খাবার অস্টিওপোরোসিস বা হাড়ক্ষয় প্রতিরোধেও দারুণ সাহায্য করে।      

তাই দুধের তৈরি খাবার খেতে হবে। তবে সেটি হবে ননি ছাড়া। ননিবিহীন দই বিশেষত প্রোটিনের জন্য খুব ভালো উৎস্য। এ ছাড়া এ থেকে আপনি পেতে পারেন ক্যালসিয়াম, ল্যাকটোব্যাসিলাস মাইক্রো-অর্গানিজম; যেগুলো কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।

৪. অ্যান্টি অক্সিডেন্ট-সম্বৃদ্ধ ফল ও সবজি 

সব ধরনের সবজি ও ফল আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রাকে কমাতে সাহায্য করে। বিশেষত যেসব সবজিতে ভিটামিন সি ও বিটা ক্যারোটিন রয়েছে সেগুলো বেশি খেতে হবে। 

  • ভিটামিন সি : ভিটামিন সি রয়েছে সব ধরনের সাইট্রাস ফলে। যেমন : কমলা, গ্রেপফল, লেবু ইত্যাদি। সব ধরনের বেরি জাতীয় ফল। যেমন : ক্র্যানবেরি, স্ট্রবেরি, ব্ল্যাকবেরি  ইত্যাদি। পেয়ারা ও আমের মধ্যেও ভিটামিন সি পাওয়া যায়। এ ছাড়া ক্যাবেজ বা পাতাকপি পরিবারের খাবারেও আছে ভিটামিন সি। যেমন : সবুজ বা চায়নিজ পাতাকপি, ব্রকোলি ইত্যাদি। ভিটামিন সি-এর আরেকটি ভালো উৎস হচ্ছে মরিচ।
  • বিটা ক্যারোটিন : গাঢ় হলুদ ফলে বিটা ক্যারোটিন রয়েছে। যেমন : আম, হলুদ পিচফল, কাঁঠাল ইত্যাদি। সবজির মধ্যে যেমন : কুমড়া, মিষ্টি আলু, কাঠবাদাম, গাজর ইত্যাদির মধ্যেও বিটা ক্যারোটিন রয়েছে। এ ছাড়া গাঢ় সবুজ সবজি যেমন : ব্রকোলি, পাতাকপি ইত্যাদি খেতে হবে শরীরে বিটা ক্যারোটিনের চাহিদা পূরণ করার জন্য।

যদি আপনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পায় তবে অবশ্যই নিয়মিত খাদ্যতালিকায় এগুলো রাখতে হবে। 

৫. রসুন এবং অন্যান্য পেঁয়াজ পরিবারের সদস্য 

সুস্বাস্থ্যের জন্য রসুন খাওয়ার  ইতিহাস বহু পুরোনো। গবেষকরা বলছেন, রসুন, পেঁয়াজ ও পেঁয়াজজাতীয় খাবার শরীরে বাজে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায় এবং হৃৎপিণ্ডকে ভালো রাখে। তরকারি ও সালাদে আমরা এটি ব্যবহার করতে পারি। এগুলো বেশ  হৃৎপিণ্ডবান্ধব খাদ্য।

৬. অপ্রক্রিয়াজাত দানাজাতীয় খাবার

সব ধরনের অপ্রক্রিয়াজাত দানাজাতীয় খাবারে ভিটামিন বি ও মিনারেলস রয়েছে। এগুলো চর্বি ও কোলেস্টেরল কমায়। এ ধরনের খাদ্য যেমন : রুটি, গম, ভুট্টা, ওটমিলস ইত্যাদি। ওটস-এর মধ্যে রয়েছে হাই সলিউবল ফাইবার যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকর।

৭. মাছ 

গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সপ্তাহে তিনদিন অথবা এর বেশি সময় মাছ খায়, তাদের শরীরে খারাপ কলেস্টেরল কম থাকে। যারা উচ্চ রক্তচাপ এবং বিভিন্ন হৃদরোগে ভুগছেন তাদের জন্য মাছ খুব উপকারী। এর মধ্যে হাই ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে। 

৮. ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড-জাতীয় খাদ্য 

আগেই বলা হয়েছে, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড শরীরে কোলেস্টেরল কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে দুর্ভাগ্যবশত অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণে এই খাবার খাই না। এখন বিভিন্ন ধরনের প্রক্রিয়াজাত খাদ্যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড ব্যবহার করা হয়। শিমজাতীয় খাদ্য, ওয়ালনাট, জলপাই ইত্যাদির মধ্যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়।

এই খাবারগুলো নিয়মিত আপনার খাদ্য তালিকায় রেখে শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণকে নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

কোলেস্টেরল থাকলে কী খাবেন না

  • রেড মিট, ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুড সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলা উচিত। এগুলো কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য দায়ী।
  • প্রক্রিয়াজাত খাবার, কেক, কুকিজ়, পেস্ট্রি, পনির, ঘি, মাখন, চিজ়, জ্যাম বাদ দিতে পারলেই ভাল। এতে শরীর থাকবে সুস্থ।
  • ক্রিমযুক্ত দুধ এবং তা থেকে তৈরি খাবার, ঘি-মাখন যতটা সম্ভব কম খাওয়ার চেষ্টা করুন।
  • ঘি, মাখন, ডালডা, বাটার, চর্বিজাতীয় ও তেলে ভাজা খাবার বাদ দেওয়াই ভালো। কোমল পানীয়, আইসক্রিম, কেক, পেস্ট্রি, চকলেট, মিষ্টি, কেনা ফলের রস, প্যাকেটজাত খাবার কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই এসব খাবার বর্জন করুন।

সবচেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে Naturicare আয়ুর্বেদিক পণ্য কিনতে, এখানে ক্লিক করুন, click here

Naturicare.in

FAQ | কোলেস্টেরল

প্রশ্ন : কোলেস্টেরল জিনিসটা কী

উত্তর : কোলেস্টেরল এক ধরনের চর্বি। এটি কয়েক ধরনের হয়ে থাকে ট্রাইগ্লিসারাইড, এলডিএল, এইচডিএল এবং টোটাল কোলেস্টরল। এর মধ্যে একটা হলো উপকারী। আর তিনটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর। 

প্রশ্ন : ক্ষতিকর যে তিনটি আছে এটি কী ক্ষতি করে থাকে? এটা নিয়ে আমরা এত চিন্তিত কেন?

উত্তর : চিন্তিত এই কারণে, এই কোলেস্টেরল জমা হয় রক্তনালিতে। জমা হতে হতে রক্তনালির স্বাভাবিক যে রক্তস্রোত তা বাধাগ্রস্ত হয়। এর ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। 

প্রশ্ন : কোলেস্টেরল বাড়লে কি শুধু হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে নাকি যেকোনো রক্তনালিকে আক্রান্ত করতে পারে বা মস্তিষ্ক আক্রান্ত হতে পারে?

উত্তর : যেকোনো রক্তনালিকে আক্রান্ত করতে পারে, মস্তিষ্ককে আক্রান্ত করতে পারে, লিম্বস আক্রান্ত করতে পারে, ব্লক করতে পারে। 

প্রশ্ন : কোলেস্টেরল বাড়লে কী কী সমস্যা হয়?

উত্তর : যদি হার্টে হয় তো হার্ট অ্যাটাক হলো, যদি লিম্বসে হয় তাহলে হাঁটতে অসুবিধা হবে। মস্তিষ্কে হলে স্ট্রোক হতে পারে।

প্রশ্ন : কোলেস্টেরল বেড়ে যায় কেন?

উত্তর : প্রথমত আমাদের খাদ্যাভ্যাসের কারণে। আর এমন জীবন যাপন যদি করেন, বেশি শুয়ে বসে থাকা। তারপর কিছু অভ্যাস আছে যেমন ধূমপান, মদ্যপান, জর্দা সেবন এসব কারণে হয়। আর কিছু রোগ রয়েছে এটার জন্য দায়ী ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ ইত্যাদি। আর কিছু ওষুধ আছে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। 

প্রশ্ন : কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায় কী?

উত্তর : ওষুধ ছাড়া আমাদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। বিশেষ করে লাল মাংস, খাসির মাংস এগুলো এড়িয়ে যেতে হবে। বেশি শাক-সবজি এবং মাছ বেশি করে খেতে হবে। আর নিয়মিত হাঁটতে হবে। ডায়াবেটিস অথবা উচ্চ রক্তচাপ থাকলে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। আর খারাপ অভ্যাস যেমন ধূমপান এবং মদ্যপান এড়িয়ে চলতে হবে।

Leave a Reply

Shopping cart

0
image/svg+xml

No products in the cart.

Continue Shopping